একে বার্ড ফ্লু-র আতঙ্কে রক্ষে নেই, তায় কুম্ভ দোসর! এই দুইয়েই পড়ছে মুরগির মাংস, ডিমের দাম। এ রাজ্যে যদিও বার্ড ফ্লুর সরকারি সতর্কতা নেই। তবে গত কয়েক দিনে কলকাতা তো বটেই, রাজ্যের অন্যান্য অংশেও কমেছে ডিম, মুরগির মাংসের দাম।
সোমবার কোনও কোনও বাজারে মুরগির মাংসের দাম নেমেছে ১৫০ টাকা কেজিতে। ডিমের খুচরো দাম পিসে সাড়ে পাঁচ টাকারও কম। ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশনের বক্তব্য, বার্ড ফ্লুর জন্য দাম পড়েছে ২-৪ শতাংশ। কিন্তু বড় ধাক্কা দিয়েছে মহাকুম্ভ।
উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের চার দিকে ৯০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ডিম-মাংস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পাশাপাশি কুম্ভের প্রভাব অন্য রাজ্যেও পড়েছে। এতে সারা দেশে দৈনিক ৫ কোটি ডিম বিক্রি কমেছে। কমেছে মুরগির মাংসের বিক্রিও। এতেই কমেছে দাম। দাম কমলেও অবশ্য বাংলায় মাংস বা ডিম—কিছুরই বিক্রি কমেনি।
গত ১৫ দিন ধরেই ডিম এবং মুরগির মাংসের দাম কমছিল। প্রথমে অন্ধ্রপ্রদেশ পরে মহারাষ্ট্রে বার্ড ফ্লু ধরা পড়ে। তার পরেই ওই রাজ্যগুলিতে মুরগির মাংস এবং ডিম খাওয়া এবং বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এরই মধ্যে বার্ড ফ্লুর আতঙ্ক ছড়ায় তেলঙ্গানায়। এতে কয়েকটি রাজ্যে ডিম এবং মুরগির মাংসের বিক্রি কমে।
এখন দেশে মুরগির মাংস উৎপাদনে বাংলা প্রথম। ভিন রাজ্যে মাংস এবং ডিমের চাহিদা কমায় গত ১০ দিনে এ রাজ্যেও মুরগির মাংসের দাম পড়তে শুরু করে। ১০-১৫ দিন আগে কলকাতায় মুরগির মাংসের দাম ছিল ২৫০ টাকা কেজি। সোমবার কলকাতার বেশ কিছু বাজারে সেই দাম ১৫০ টাকা কেজিতে নামে। তবে সল্টলেক ও লাগোয়া কিছু এলাকায় ১৮০-১৮৫ টাকা কেজি দরে বিকিয়েছে মাংস। কলকাতার বাইরে কিছু এলাকায় দাম কেজিতে ১৫০ টাকারও কম ছিল।
ডিসেম্বর এবং জানুয়ারির প্রথম দিকে রাজ্যে ডিমের দাম পিস প্রতি সাড়ে সাত টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। গত ১৫ দিনে ডিমের দামও কমেছে। সোমবার বেশিরভাগ বাজারে ডিমের দাম ছিল সাড়ে পাঁচ টাকা পিস। এক ট্রে অর্থাৎ ৩০টি ডিম ১৫০-১৫৫ টাকাতেও বিক্রি হয়েছে। দাম এতটা কমায় পোলট্রি খামারের মালিকরা চিন্তায় পড়েছেন। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন, বাংলায় বার্ড ফ্লু–র সংক্রমণের ঘটনা সামনে আসেনি। তবে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে
পশ্চিমবঙ্গ পোলট্রি ফেডারেশনের সম্পাদক মদন মাইতির বক্তব্য, ‘উত্তরপ্রদেশে প্রয়াগরাজের বড় অংশে মুরগির মাংস ও ডিম বিক্রি বন্ধ। এতে চাহিদা অনেকটা কমেছে। আমাদের হিসেবে সারা দেশে দৈনিক ৫ কোটি ডিমের বিক্রি কমেছে। একই সঙ্গে দৈনিক ১০ লক্ষ কেজি মুরগির মাংস বিক্রি কমায় দাম পড়েছে।’ সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশের যে যে অংশে মাংস, ডিম বিক্রি বন্ধ, সেখানে খামারে মুরগির গড় ওজন দাঁড়িয়েছে ৭-৮ কেজি। সেখানকার খামার মালিকেরা বড়সড় ক্ষতির মুখে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন