Top News

পোলিশ মেয়েকে মাদক খাইয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে দেহ ব্যাগে ভরে পাচার করে দেয় বাংলাদেশি সালাহউদ্দিন, অবশেষে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় গ্রীসের আদালত

 


কাজের সন্ধানে, পড়াশোনার অজুহাতে বা শরণার্থী সেজে ইউরোপীয় দেশগুলিতে গিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে ইসলামি রাষ্ট্রগুলির নাগরিকরা । আর এই সমস্ত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের শীর্ষে স্থান করে নিয়েছে পাকিস্তানিরা । তবে পাকিস্তানকে আদর্শ হিসাবে ভাবা বাংলাদেশি মুসলিম পুরুষরাও কিছু কম যায় না । বছর দুয়েক আগে সালাহুদ্দিন শেখ(এস) নামে একজন বাংলাদেশি একজন পোলিশ তরুনীকে মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে ধর্ষণের পর মৃতদেহ ব্যাগে ভরে নির্জন জায়গায় ফেলে দিয়ে এসেছিল । সেই হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হয় । দীর্ঘ প্রায় এক বছর বিচার প্রক্রিয়া চলার পর অবশেষে গ্রীসের আদালতে দোষী সব্যস্ত হয় সালাহুদ্দিন । সংবাদমাধ্যম টিভিপি ওয়ার্ল্ড এর গত বছরের ডিসেম্বরের প্রতিবেদনে এই খবর প্রকাশিত হয় । প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রীক দ্বীপ কোসে এক পোলিশ মহিলাকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত এক বাংলাদেশী ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের জুনে ২৭ বছর বয়সী পোলিশ তরুনী আনাস্তাজা রুবিনস্কাকে (Anastazja Rubińska) অপহরণ, ধর্ষণ এবং হত্যার অভিযোগে সালাহুদ্দিন এস (Salahuddin S)এর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, যখন পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায় এবং তার বাহু এবং মুখে আঁচড়ের চিহ্ন ছিল। আদালতে হাজির হয়ে ৩৩ বছর বয়সী এই ব্যক্তি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে । কিন্তু তাকে অপহরণ এবং “ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা” করার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়। রায় ঘোষণার পর, আনাস্তাজ্জার বাবা আন্দ্রেজ রুবিনস্কি পোলিশ দৈনিক ফ্যাক্টকে বলেন, ‘এই শাস্তি নাস্তুসিয়াকে ফিরিয়ে আনবে না, তবে সে যা প্রাপ্য ছিল তা পেয়েছে, সে যেন আর কখনও কারাগার থেকে বের না হয় এবং যেন আর কখনও কাউকে এভাবে হত্যা না করতে পারে ।’

প্রতিবেদন অনুযায়ী,২৭ বছর বয়সী আনাস্তাজ্জা রুবিনস্কার নিখোঁজের পর এক সপ্তাহ ধরে তদন্তের পর ২০২৩ সালের জুন মাসে গ্রীক পুলিশ তার শ্বাসরোধ করা দেহাবশেষ খুঁজে পায়। পশ্চিম পোল্যান্ডের রোক্লো থেকে আসা রুবিনস্কা মে মাসে গ্রীসের কোস (Kos) দ্বীপে এসেছিলেন, যেখানে তিনি এবং তার প্রেমিক মারমারির(Marmari) রিসোর্টের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে চাকরি পেয়েছিলেন। ২০২৩ সালের ১২ জুন সন্ধ্যায়, সে একটি দোকানে এবং তারপর স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁয় যায় যেখানে সে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা একদল পুরুষের মুখোমুখি হয়, যারা গাঁজা কিনতে গিয়েছিল ।

আনাস্তাজ্জা রুবিনস্কার তার প্রেমিককে ফোন করে জানায় যে তাদের মধ্যে একজন তাকে বাড়ি পৌঁছে দেবে৷ কিন্তু কয়েক মিনিট পরেই প্রেমিককে এসে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে ।  কিন্তু যখন প্রেমিক সেখানে  এসে পৌঁছায়, তখন আনাস্তাজ্জা রুবিনস্কারকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ছয় দিন পর একটি ঝোপের নিচে তার অর্ধনগ্ন দেহ পাওয়া যায়।ময়নাতদন্তে জানা যায় যে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। কয়েকদিন পর সালাউদ্দিন এস-কে গ্রেপ্তার করা হয়।

দোষী সাব্যস্তের রায় ঘোষণার পর আদালতের বাইরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আনাস্তাজ্জার বাবা আন্দ্রেজ বলেন,’বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা আইনজীবী আপিলের ঘোষণা করেছেন, কিন্তু এই রায় আমাদের জন্য এক ধরণের স্বস্তি, একটি নির্দিষ্ট পর্যায় শেষ হয়ে গেছে। আদালত অপরাধীকে শাস্তি দিয়েছে, রায় এত তাড়াতাড়ি দেওয়া হয়েছে কারণ আদালতের কোনও সন্দেহ ছিল না যে সে-ই আমাদের মেয়েকে খুন করেছে।’ 

বর্তমানে সেই ঘটনা নিয়ে নতুন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে । ১৩ ফেব্রুয়ারী রেডিও ইউরোপ তার এক্স হ্যান্ডেলে হত্যার শিকার পোলিশ তরুনী এবং ঘাতক বাংলাদেশি যুবকের ছবি পোস্ট করে লিখেছে,’বাংলাদেশী অভিবাসী সালাহউদ্দিন এস গ্রীসে পোলিশ কিশোরী আনাস্তাজ্জা রুবিনস্কাকে অপহরণ করে। তাকে মাদক খাইয়ে ধর্ষণ করে। এরপর তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। সে তার দেহ একটি মোটরসাইকেলের সাথে বেঁধে তাকে মাইলের পর মাইল টেনে নিয়ে যায়। তারপর বিকৃত হত্যাকারী আনাস্তাসিয়াকে একটি আবর্জনার ব্যাগে রেখে একটি গাছের নিচে লুকিয়ে রাখে। আনাস্তাসিয়ার আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না এবং তিনি পোল্যান্ড থেকে গ্রিসে এসেছিলেন শুধুমাত্র একটি হোটেলে কাজ করার জন্য। তার উদ্দেশ্য ছিল তার পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা। কিন্তু তিনি একজন অবৈধ অভিবাসীর  শিকার হয়েছিলেন। তোমার আত্মা শান্তি পাক আনাস্তাসিয়া।’।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন