হাওড়ার আমতার এক দম্পতি ২০০৫ সালে এক পুত্রসন্তানের পিতা-মাতা হন। তারপর তাঁদের ডিভোর্স হয়। এরপর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে আমতায় বাপের বাড়িতে চলে আসেন মা। ছেলেকে নিয়ে সেখানেই থাকতে শুরু করেন। জন্মসূত্রে তিনি তফসিলি ‘তিয়ার’ সম্প্রদায়ভুক্ত। সেই সংক্রান্ত সার্টিফিকেটও তাঁর রয়েছে। বিবাহবিচ্ছিন্না মহিলা চান তাঁর নাবালক সন্তান কেবল মায়ের পরিচয়েই বাঁচুক। তাই ছেলেকে তফসিলি জাতিভুক্ত হিসেবে স্বীকৃতি দিতে ২০২২ সালের মে মাসে তিনি মহকুমাশাসকের কাছে আবেদন জানান। ওই বছর সেপ্টেম্বর মাসে জানা যায় তাঁর আবেদন নাকচ হয়েছে। কারণ হিসেবে তাঁকে জানানো হয়েছে, আবেদনকারী মা তফসিলি জাতিভুক্ত হলেও জাতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে পিতৃপরিচয়ই নির্ণায়ক। এক্ষেত্রে সন্তানের পিতা যেহেতু জন্মসূত্রে জেনারেল কাস্ট, তাই আবেদনকারীর ছেলেকে তফসিলি জাতিভুক্ত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যাবে না।
এই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সরাসরি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। ততদিনে তাঁর ছেলে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গিয়েছেন। মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। আবেদনের গুরুত্ব খতিয়ে দেখে বিচারপতি জানান, বিবাহবিচ্ছিন্না মহিলার সন্তান ইচ্ছে করলে শুধুমাত্র মায়ের পরিচয়ই বহন করতে পারেন। সন্তান কোন জাতিভুক্ত হবে, তা নির্ধারণে পিতৃ পরিচয় নির্ণায়ক নয়। এক্ষেত্রে সন্তান যেহেতু সাবালক হয়ে গিয়েছেন, তাই তাঁকেই আবেদন করতে হবে মায়ের জাতিভুক্ত হওয়ার জন্য। সেই আবেদন যথাযোগ্য হলে আবেদনকারীকে মায়ের জাতিভুক্ত হওয়ার স্বীকৃতি দিতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন