আরজি কর-কাণ্ডে ৩৫টি প্রশ্ন তুলে ফের শিয়ালদহ কোর্টে (Sealdah Court) আবেদন নিহত তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মায়ের (Victim Parents)। সিবিআই তদন্ত (CBI Investigation) নিয়ে প্রশ্ন তুলে শনিবার ৫৭ পাতার একটি ফাইল বিচারককে জমা দিয়েছেন তাঁরা। দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদনের পাশাপাশি আরও কেউ জড়িত কিনা, তা নিয়ে জোরদার তদন্ত দাবি করেছে পরিবার।
আদালতে শুনানিতে এদিন সওয়াল করেন ধৃত সিভিক সঞ্জয় রায়ের (Sanjay Roy) আইনজীবীও।
সূত্রের খবর, তরুণীর পরিবারের তরফে এদিন মূলত ক্রাইম সিনের প্রমাণ লোপাট নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আরজি কর হাসপাতালের (RG Kar hospital) প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ (Sandip Ghosh) ও টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নিহত চিকিৎসকের পরিবার। সিবিআইয়ের তদন্ত সংক্রান্ত নানান প্রশ্নও রয়েছে সেখানে। একাধিক অপরাধী জড়িত থাকার আশঙ্কার কথাই ফের আদালতের কাছে বললেন অভয়ার বাবা মা।
প্রমাণ লোপাটে সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন তোলা হয়েছে ফাইলে। পাশাপাশি সিবিআই কেন সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিতে পারেনি তাও বলা হয়। রাতে অভয়া ও সহকর্মীরা অনলাইনে অর্ডার করা খাবার খেয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। খাবার কোন অ্যাকাউন্ট থেকে অর্ডার করা হয়েছিল, ফুড ডেলিভারি অ্যাপের কাউকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে কি না, বা ফুড কন্টেনার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কি না, সিবিআই কেন প্রমাণ জোগাড়ের চেষ্টা করেনি, সেসব প্রশ্ন তুলেছে নিহত তরুণী চিকিৎসকের পরিবার।
সার্বিকভাবে এই বিষয়গুলি মাথায় রাখলে সেমিনার হল অপরাধস্থল হতে পারে না, এমনটাই আদালতে বলল নিহতের পরিবার। নিহত তরুণীর সঙ্গে ওই রাতে যে চারজন চিকিৎসক খেয়েছিলেন, তাদের কেন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি, জেনারেল ডায়েরি দায়ের হলে তার উল্লেখ কেন করা হয়নি, এমনই বেশকিছু প্রশ্ন তুলে আদালতে নতুন করে তদন্তের দাবিতে সরব বলেন অভয়ার বাবা-মা। আরও যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করে চার্জশিট জমা দেওয়া হোক,দাবি তাঁদের।
অপরাধস্থল নিয়ে এদিন শিয়ালদহ আদালতে সওয়াল করেন ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের আইনজীবীও। ফরেনসিক রিপোর্টের বেশকিছু অংশ তুলে ধরে এদিন একাধিক প্রশ্ন রাখেন তিনি। আরজি করকাণ্ডে তাঁকে একা বলির পাঁঠা করা হচ্ছে বলে সরব হয়েছিল সঞ্জয় রায়। এদিন তাঁর আইনজীবী সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় ফরেনসিক রিপোর্ট তুলে ধরে বলেন, সেমিনার রুমের কাঠের তক্তার উপর ম্যাট্রেস থেকে কোনও ধস্তাধস্তির চিহ্ন মেলেনি।
সঞ্জয়ের আইনজীবীর আরও দাবি, ম্যাট্রেস ছাড়াও কাঠের টেবিল, তক্তা, মেঝে থেকে মেলেনি কোনও দাগ। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে যা দেখা গিয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে বলে দাবি ধৃতের আইনজীবীর। তিনি বলেন, যে প্রামাণ্য মিলেছে ও সিসিটিভিতে যেটুকু অংশ দেখা যাচ্ছে, তাতে এক জনের পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব না। এর নেপথ্যে অন্য কেউ থাকতে পারে। তবে শনিবার ধৃতের আইনজীবীর সওয়াল শেষ না হওয়ায় ফের ৮ জানুয়ারি বুধবার পরবর্তী শুনানি হবে মামলার।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন