‘ঘুষের টাকা না হলে ও ভাবে এত টাকা কেউ বাড়িতে রাখেন? তদন্ত একটা জায়গায় আসুক, তারপর জামিন নিয়ে ভাবা যাবে।‘ – বুধবার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলায় এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূয়ানের বেঞ্চে ছিল রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলার শুনানি। শীর্ষ আদালতে পার্থর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী মুকুল রোহতগী। শুনানিতে পার্থর আইনজীবী আদালতে জানান, নিয়োগ মামলায় পার্থ দু’বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দি। এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া বাকিদের জামিন হয়েছে। পার্থ অসুস্থ। তাই তাঁকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হোক।
সওয়ালের শেষে বিচারপতি সূর্য কান্ত জানান, 'বাকিরা কেউ মন্ত্রী নন। পার্থ শিক্ষা মন্ত্রী ছিলেন।' এরপরেই বিচারপতির প্রশ্ন, ‘তিনি যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হন, সমাজকে আমরা কী বার্তা দেব? একজন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি এ ভাবে জামিন পেতে পারেন? আপনার মক্কেলের বাড়ি থেকে কোটি কোটি নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে।‘
আইনজীবী জানান, পার্থর ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে কিছু উদ্ধার হলে তাঁর দায় প্রাক্তন মন্ত্রীর নয়। বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ‘দু’জনের বিরুদ্ধে যৌথ সম্পত্তি কেনার অভিযোগ রয়েছে। মন্ত্রীর পিএ-র বাড়ি থেকে বিপুল টাকা উদ্ধার হলে মন্ত্রী কি তার দায় এড়াতে পারেন?’ এরপরেই বিচারপতি বলেন, ‘মন্ত্রী হয়ে পার্থ নিশ্চয়ই নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিতেন না। তাই হয়তো ডামি ব্যক্তিকে সামনে রেখে তিনি দুর্নীতি করেছেন। ওঁর পরিচিত বা ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে। এই অবস্থায় ওঁকে জামিন দিলে তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।‘
বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ‘ঘুষের টাকা না হলে ও ভাবে এত টাকা কেউ বাড়িতে রাখেন? তদন্ত একটি জায়গায় আসুক। তার পরে জামিন নিয়ে বিবেচনা করব।‘
এদিন সুপ্রিম কোর্টে সম্পন্ন হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলার শুনানি। আপাতত রায় দান স্থগিত রেখেছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ। তদন্তের অগ্রগতি হলেই জামিন নিয়ে বিবেচনা করা যাবে বলে জানিয়েছে আদালত।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন