Top News

বাংলাদেশ: রাজিবুল এবং তার সহযোগীরা বৃদ্ধ হিন্দু মহিলাকে গণধর্ষণ করে এবং তারপর তাকে বিষ খাইয়ে মুক্তিপণ হিসাবে ২ লাখ টাকা দাবি করে

 


নড়াইল সদর উপজেলায় সংরক্ষিত ওয়ার্ডের এক নারী ইউপি সদস্যকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর মুখে বিষ ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার দুই দিন পর যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত শেষে আজ শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁর মরদেহ নড়াইলে গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়।

হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই নারী (৫০) নড়াইল সদর উপজেলার একটি ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন।

এ বিষয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) বজলুর রশীদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীকে ধর্ষণ করে বিষ খাওয়ানো হয়েছে। ধর্ষণের ক্ষত ছিল। আলামতও সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই নারীর পেটে বিষ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ভিসেরা প্রতিবেদন হাতে এলে বিস্তারিত বলা যাবে।

ওই নারীর ছেলে ও পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে টিসিবির মালামাল বিতরণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় যুবক রাজিবুল পাওনা টাকা দেওয়ার জন্য ওই ইউপি সদস্যকে ফোন করেন। এরপর তিনি টাকা আনতে তাঁর ইউনিয়নের এক ব্যক্তির বাড়িতে গেলে রাজিবুলসহ কয়েকজন তাঁকে ধর্ষণ করে এবং দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ভুক্তভোগী নারী বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলে তাঁর মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে ভয়ে তিনি কাউকে কিছু বলেননি। তবে তিনি অসুস্থ ছিলেন। অসুস্থতা বাড়লে পরদিন বুধবার সকালে তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় তিনি ছেলের কাছে তাঁর ওপরে নির্যাতনের বর্ণনা ও জড়িত ব্যক্তিদের নাম বলেন।

কাঁদতে কাঁদতে নিহত ওই নারীর ছেলে বলেন, ‘মায়ের সঙ্গে হওয়া ঘটনার বর্ণনা দিতে দিতে আমার হাতের ওপর মা মারা যান। আমার মায়ের সঙ্গে যারা এসব করছে, আমি দোষীদের কঠিন বিচার চাই, ওদের ফাঁসি চাই। আমার মা যেন সুষ্ঠু বিচার পান। আমার আর কিছু চাওয়ার নেই।’

এদিকে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের এলাকায় পাওয়া যায়নি। এ কারণ তাঁদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেলে তাঁর লাশ নড়াইলে এসে পৌঁছায়। পুলিশ এলাকা পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় মামলা হবে। অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গ্রামের ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল

ঘটনা নিয়ে পুলিশের বক্তব্য, গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে ওই নারীর কাছাকাছি এলাকার এক মুসলিম যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। মঙ্গলবার রাতে স্থানীয়রা তাঁদের হাতেনাতে ধরে ফেলে। উপস্থিত লোকজন তাঁর টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং তাঁকে যৌন নির্যাতন করে।
লজ্জায় তিনি বিষ পান করেন এবং তাঁর মৃত্যু হয়।
ভুক্তভোগী নারীর ছেলের দাবি, “আমার মায়ের সঙ্গে নির্মম অত্যাচার করা হয়েছে। তাঁকে ন্যায়বিচার দেওয়া উচিত।”


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন