কলকাতার(Kolkata) আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের(R G Kar Medical College and Hospital) পড়ুয়া চিকিৎসকের ধর্ষণ খুনের(Doctor Rape and Murder Case) ঘটনায় আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই(CBI)। কিন্তু তাঁরা এখনও পর্যন্ত এই ধর্ষণ খুনের ঘটনায় দ্বিতীয় আর কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি।
জানা গিয়েছে, ময়না তদন্তের ভিডিয়োগ্রাফির আবছা, ত্রুটিপূর্ণ ছবিগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষাগারে বিশ্লেষণে করা হয়েছে। মৃতদেহের আশপাশ থেকে সংগৃহীত তথ্যপ্রমাণের ফরেন্সিক বিশ্লেষণও অপরাধের আসল ধাঁচটি মেলে ধরছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি। আপাত ভাবে মৃতদেহের সামনের অংশে ১৫টি গুরুতর বাহ্যিক জখমের চিহ্ন মিলেছে। মৃতদেহ ব্যবচ্ছেদের পরে ৯টি গুরুতর অভ্যন্তরীণ আঘাতের চিহ্নও পাওয়া গিয়েছে। অথচ দেহের পিছনের অংশের আঘাতের উল্লেখ ময়না তদন্ত এবং সুরতহাল রিপোর্টে নেই। তদন্তকারীদের একটি সূত্র বলছে, দ্বিতীয় বার ময়না তদন্তের অবকাশ না থাকায় রিপোর্টে থাকা ক্ষতচিহ্নগুলির ছবি ফরেন্সিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে খুঁটিয়ে দেখা হয়েছে। তাতেই ওই খুনের ঘটনায় একাধিক ব্যক্তির জড়িত থাকার আভাস মিলছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি। ওই সূত্রটির দাবি, চিকিৎসক-পড়ুয়াকে কার্যত গণপিটুনির(Mass Beating) আদলে বেধড়ক মারা হয়। প্রবল ভাবে মৃতার গলা টিপে 'থাইরয়েড কার্টিলেজ' গুরুতর জখম করার আভাস মিলছে। সাংঘাতিক বল প্রয়োগ করে ওই তরুণীর মুখ, নাকও চেপে ধরা হয় এবং তার পরে দেহের ওপরের অংশে আঘাত করা হয়। তখনই চোখ ও মুখের ভিতরে রক্তপাত হয়েছে।
তদন্তকারীদের সূত্রে আরও দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বেশ কিছু গুরুতর আঘাতের প্রসঙ্গ পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। মৃতদেহের নীচে নীল রঙের তোয়ালের মতো একটি কাপড়ে রক্তের দাগ লেগে ছিল। মৃতার ডান কানের পিছন থেকে কিছু রক্ত ওই কাপড়ে মিলেছে। কিন্তু পুরোটা স্পষ্ট নয়। প্রশ্ন উঠেছে, ওই কাপড়ে যতটা রক্ত মিলেছে, তার সবটাই কি কান থেকে? তদন্তকারীদের সূত্রটি জানাচ্ছে, অসম্পূর্ণ সুরতহাল এবং ময়না তদন্ত রিপোর্টে মৃতার দেহের পিছনে আঘাতের কথা বলাই হয়নি। তদন্তকারী-সূত্রের দাবি, চিকিৎসক পড়ুয়ার মাথা একাধিক বার প্রবল ভাবে ঠুকে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। সেই রক্তই হয়তো কাপড়ে রয়েছে। আবার একই সঙ্গে, সেমিনার কক্ষটি 'ক্রাইম সিন' বা অপরাধের ঘটনাস্থল হিসাবে ধরে নেওয়া হলেও সেই রুমের অবস্থা চিকিৎসক-পড়ুয়ার দেহের আঘাতের চিহ্নের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। প্রবল আক্রমণের পরেও কী ভাবে সেমিনার কক্ষের জিনিসপত্র ওলটপালট হয়নি! এমনকি মৃতার মাথার পিছনে মোবাইল, ল্যাপটপ, ডায়েরির একটি পাতা ও ভাঙা চশমাও সুচারু ভাবে সাজিয়ে রাখা ছিল! অন্যত্র খুন করে দেহ সেমিনার হলে সাজিয়ে রাখার বিষয়টিও তাই উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে তদন্তকারীদের অভিমত।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন