Top News

বাংলাদেশ : স্কুলের হিন্দু ছাত্রীদের হিজাব পরা ও কোরান মুখস্ত করার ফতোয়া, বিক্ষোভের জেরে সাময়িক বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক মুস্তাফিজুর রহমান

 


বাংলাদেশের একটি মেয়েদের স্কুলে হিন্দু ছাত্রীদের হিজাব পরা এবং কোরান মুখস্ত করে আসার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে । শুধু তাইই নয়, একজন বিবাহিতা ছাত্রীকে সিঁদূর-শাঁখা পরে স্কুলে আসায় প্রধান শিক্ষক ও অনান্য শিক্ষকদের কটুক্তি সহ্য করতে হয় এবং এমনকি হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করা হয় বলে অভিযোগ ।

ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের রংপুর জেলার মুসলিম উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে । ছাত্রীদের বিক্ষোভের জেরে প্রধান শিক্ষক মুস্তাফিজুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে ।


প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে স্কুলের সামনে ছাত্রীদের বিক্ষোভ প্রদর্শনের একটা ভিডিও এক্স-এ শেয়ার করে হিন্দু ভয়েস (@HinduVoice) লিখেছে, 'বাংলাদেশের রংপুর জেলা থেকে খবর আসছে। 'মোসলেম উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়'-এর ছাত্রীরা প্রধান শিক্ষকের আদেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেয়েদের হিজাব পরার এবং কোরান মুখস্থ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অধিকাংশ ছাত্রই হিন্দু সম্প্রদায়ের। প্রতিবাদের পর প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।'


ভিডিওতে এক ছাত্রীকে বলতে শোনা যায়,'আমাদের বলছে কোরান শরীফের সুরা সাত দিনের মধ্যে মুখস্ত করে আসতে । আমাদের হিজাব পড়তে বলছে । হিজাব না পড়লে নাকি আমাদের শরীর ছেলেরা দেখবে । ক্লাসের স্যারেরা আমাদের বাজেভাবে জ্ঞান দেয় ।' অন্য একজন ছাত্রী বলে,'আমাদের ক্লাসে স্যার এসে বললেন যে তোমরা যে ক'জন হিন্দু মেয়ে আছো দাঁড়াও । আমরা দাঁড়ালাম । তখন বলছে তোমরা হিজাব পর না কেন? আমরা জিজ্ঞাসা করলাম স্যার, আমরা কেন হিজাব পরবো ? তখন উনি বললেন, তোমরা যে রাস্তা দিয়ে যাও তখন ছেলেরা তোমাদের শরীর দেখে আকর্ষিত হয়। এই কারণে তোমাদের হিন্দু মেয়েদের আজকাল বিয়ে হচ্ছে না।' মেয়েটি আরো অভিযোগ করে যে প্রধান শিক্ষক তাদের বাজে ভাষায় গালিগালাজ করে । মেয়েটি বলে,'উনি বলেন যে পরের দিন থেকেই হিজাব পরে আসবে ।'


প্রথম মেয়েটি ফের বলতে শুরু করে,'আমরা স্কুলে গীতা পাঠের জন্য বলেছিলাম । কিন্তু ওনার কথা গীতার কথা আমরা বুঝি না এবং আমাদের বাবা মাও বোঝে না। তিনি বলেন,তোমাদের মা-বাবারা কোনদিন গীতা পড়েছে ? গীতার অর্থ জানো তোমরা ? অথচ ওরা কোরআন শরীফ পড়ে, তার ব্যাখাও করে। যেখানে ১৫ মিনিট সময় সেখানে ২০-২৫ মিনিট ধরে কোরান পড়ায় । আর আমরা গীতা পাঠ এর কথা বললে বলে সময় নেই ।' অন্য একটি মেয়ে জানায় যে আগে স্কুলে গীতা পাঠ হতো কিন্তু পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় । দাবি জানালে ফের গীতা পাঠ শুরু হয় । কিন্তু কিছুদিন পরে ফের বন্ধ করে দেওয়া হয় ।


দ্বিতীয় মেয়েটি বলতে শুরু করে, 'আমাদের ধর্ম নিয়ে যত রকম নেগেটিভ কথা আছে সব বলে ।' অন্য একটি মেয়ে বলে,'আমাদের এসে বলে মূর্তি পূজা করে কি লাভ । শিবলিঙ্গ নিয়ে অনেক ধরনের কথা বলে ।'


বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন বিবাহিতা ছাত্রী বলেন, 'আমাকে বারবার জিজ্ঞেস করা হয় আমি শাঁখা সিঁদুর কেন পরি ? এই ধরনের কথাবার্তা স্কুলে কেন চলবে? আমি শাঁখা সিঁদুর পরি এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার । কিন্তু শিক্ষকরা ক্লাসের মধ্যে এ কথা কেন বলবে ? এই কারণে আমাকে সব সময় অপমান কেন করা হয় ?' ছাত্রীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন ঠিক কবে হয়েছিল সেটা ওই এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়নি । তবে বিক্ষোভের সময় তাদের ছাত্রীদের পিছনে তাদের অভিভাবকদের উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে ।


পৃথক একটি ঘটনা প্রসঙ্গে ভয়েস অফ বাংলাদেশি হিন্দাস একটি ভিডিও পোস্ট করে লিখেছে,'শিখা রানী রায় নামে একজন গর্ভবতী শিক্ষিকা যাকে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ বিলাল পদত্যাগ করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। তার কি দোষ ছিল? শুধু হিন্দু বলেই। তিনি পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে মারধর করা হয় এবং মুসলিম জনতা উল্লাস করার সময় প্রকাশ্যে চরম অপমানিত হয়ে প্যারেড করা হয় ।'

প্রসঙ্গত, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটানোর পর বাংলাদেশ চলে গেছে জামাত ইসলামী এবং বিএনপি'র মত ইসলামিক জঙ্গি দলগুলির হাতে । হাসিনা ভারতে পালিয়া আসার পর থেকেই মূলত হিন্দুরা জিহাদীদের সফট টার্গেট হয়ে গেছে । হিন্দুদের খুন, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, জমি জায়গা জবরদখল, বাড়িঘর দোকানপাট লুটপাট-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ । যে কারণে সে দেশের হিন্দুরা এখন চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে ।।


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন