কালীঘাট মন্দিরের পাশে আদিগঙ্গার যে সব প্রাচীন ঘাট রয়েছে, সেগুলোকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। ওই পরিকল্পনারই অঙ্গ হিসেবে কালীঘাট ব্রিজের পাশে দুই ঘাটকে আলো দিয়ে সাজানো হবে বলেই খবর। এর একটি হলো, গায়ত্রীদেবী ঘাট এবং অন্যটি হলো কল্পতরু ঘাট। ঘাটগুলোকে দৃষ্টিনন্দন এবং পর্যটকদের উপযোগী করে তুলতে সামনে বসানো হবে গ্লোসাইন বোর্ড। সব মিলিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা খরচ হবে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে পুরসভার তরফে।
প্রসঙ্গত, কালীঘাট মন্দিরের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে আদিগঙ্গা। বলাবাহুল্য, এই আদিগঙ্গা দিয়েই চাঁদ সদাগর থেকে শুরু করে বল্লাল সেন, সন্তোষ রায় চৌধুরী, রানী রাসমনি, রানী ভবানী বজরা নিয়ে গিয়েছেন। এছাড়া, এক সময়ে কালীঘাট মন্দিরে যাঁরা পুজো দিতে আসতেন, তাঁদের অনেকেই পুজো দেওয়ার আগে স্নান করতেন এই ঘাটগুলিতে। এর পাশাপাশি, আশপাশের বাসিন্দারাও ঘাটগুলো নিয়মিত ব্যবহার করতেন। আদিগঙ্গা মজে যাওয়ায় সেই ঘাটগুলো আর আগের মতো ব্যবহার হয় না। আর দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ঘাটগুলোর এখন জরাজীর্ণ দশা।
প্রসঙ্গত, অথচ কালীঘাট মন্দিরের মতন এই সব ঘাটের সঙ্গেও জড়়িয়ে রয়েছে অনেক পুরোনো ইতিহাস। এক সময় রানি রাসমনি আদিগঙ্গার পাড়ে নিজস্ব ঘাট বানিয়েছিলেন। এ রকম অজস্র ঘাট রয়েছে আদিগঙ্গার পাড়ে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ইতোমধ্যেই কালীঘাট সদর ঘাট সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। আর সেই কাজ করতে গিয়ে ঘাটে পুরোনো আমলের পাথরের সিঁড়ি বেরিয়ে পড়ে। পুরোনো দিনের ঐতিহ্য ধরে রাখতে লাল রংয়ের স্যান্ডস্টোন দিয়ে সেই সিঁড়ি মেরামত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।
এ বিষয়ে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘এক সময়ে আমরা আদিগঙ্গায় কত সাঁতার কাটতাম! মুখ্যমন্ত্রী নিজেও নিয়মিত আদিগঙ্গায় সাঁতার কাটতেন। কিন্তু এখন আদিগঙ্গায় নামার মতোই পরিস্থিতি নেই। সে জন্য ঘাটগুলোও ঠিকমতো ব্যবহার হয় না।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন