চলতি মাসের ৯ তারিখ আরজি করে নির্মম ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তারপর ১৫ দিনে সমগ্র দেশে যে সমস্ত ধর্ষণের ঘটনা সকলের নজরে এসেছে, তার একটি ‘কোলাজ’ তৈরি করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি লিখলেন, গোটা দেশ ধর্ষণের বিচার চেয়ে আন্দোলন করছে। অথচ, এই কোলাজটিই বলে দিচ্ছে এই মুহূর্তে ভারতের পরিস্থিতি কেমন? দেশে এই মুহূর্তে ধর্ষণবিরোধী আইনের খুব প্রয়োজন বলেই উল্লেখ করেন। কারণ, পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে প্রতি ১০০টি ধর্ষণের ঘটনায় ৭৪ জন শাস্তিই পান না।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় ছাত্র সংগঠন। সেদিন সকালেই নিজের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেন অভিষেক। যে কোলাজ সাংসদ পোস্ট করেছেন, তার শিরোনাম— ‘‘আরজি করের ঘটনার পর থেকে ১৫ দিনে মহিলাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং শারীরিক অত্যাচারের একাধিক ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এসেছে।’’ আর সেই সমস্ত শিরোনামের কোথাও লেখা যোধপুরে মন্দিরের বাইরে শুয়ে থাকা তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণের কথা। আবার কোথাও লেখা অসমে ১৪ বছরের কিশোরীকে টিউশন পড়ে ফেরার পথে ধর্ষণ। কোথাও আবার ওড়িশায় দুই রোগীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আইসিইউয়ের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে!
এদিন তৃণমূলের সেকেন্ড হাইকোমান্ড লিখেছেন, ‘‘ভারতের এই পরিস্থিতির জবাব একটাই। কঠোর ধর্ষণবিরোধী আইন প্রয়োজন, যা ৫০ দিনের মধ্যে ধর্ষণে অভিযুক্তের শুনানি এবং দোষী সাব্যস্ত করবে। কারণ, দেশে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত করার হার মাত্র ২৬%।’’ অর্থাৎ, পুলিসের কাছে রিপোর্ট দায়ের হওয়া প্রতি ১০০টি ধর্ষণের ঘটনায় ২৬ জন দোষী সাব্যস্ত হন, আর বাকি ৭৪ জন শাস্তিই পান না।
উল্লেখ্য, আরজি করের ঘটনা নিয়ে তৃণমূল সাংসদ প্রথম মুখ খোলেন ১৪ আগস্ট রাতে। তারপর গত ২২ আগস্ট দেশে ধর্ষণের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে দ্বিতীয় পোস্ট করেছিলেন অভিষেক। আর সেই পোস্টে ধর্ষণবিরোধী আইন আনার দাবি করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি, এও বলেন যে, ওই আইনের জন্য রাজ্য সরকারকেই চাপ দিয়ে হবে কেন্দ্রের উপর। অভিষেকের ওই পোস্টের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ধর্ষণবিরোধী আইন চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দেয় রাজ্য সরকার। প্রধানমন্ত্রীকে ওই চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পোস্টের পাঁচ দিন পরে মঙ্গলবার ফের সমাজমাধ্যমে আরজি কর এবং দেশে ধর্ষণবিরোধী আইন আনার ব্যাপারে সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ। এদিন তিনি লেখেন, ‘‘আমাদের যদি এই অপরাধের শিকারদের সুবিচার পাইয়ে দিতেই হয়, তবে অবিলম্বে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমাদের একটি সময় নির্দিষ্ট ধর্ষণবিরোধী আইনের দাবি জানাতে হবে। তাছাড়া বাকি সব কিছুই সারবত্তাহীন প্রচেষ্টা হবে।’’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন