Top News

চিৎকার করে কাউকে বলে দেবে তাই খুন করেছি

 

আরজি কর মেডিকেল কলেজ থেকে যখন নির্যাতিতের দেহ 

উদ্ধার হয়, সেই সময় দৃশ্য যেন বিভীষিকা! নৃশংস, নারকীয় হত্যা যেন! তবে এই ভয়াবহ নৃশংসতার পরও নির্বিকার, নিরুত্তাপ চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়।

হেড ফোন আর সিসিটিভি ফুটেজই ধরিয়ে দিয়েছিল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মূল অভিযুক্তকে। সিসিটিভি ফুটেজে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে শনাক্ত করেছিলেন একজন হোমগার্ড। এরপরেই সঞ্জয়কে আটক করে পুলিশ। টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় অপরাধ কবুল করে সিভিক ভলান্টিয়ার।

তবে পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় খুনের কথা স্বীকার করলেও তা বলেছেন অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায়। পুলিশ সূত্রে দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় সঞ্জয় বলেন যে চিৎকার করে কাউকে বলে দেবে তাই খুন করেছি। আমাকে ফাঁসি দিতে চাইলে দিয়ে দিন।

বিধাননগরের সশস্ত্র আরক্ষা বাহিনীর ব্যারাকে এসে সঞ্জয় রায়কে আটক করে পুলিশ। চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনে ধৃত সঞ্জয়কে যখন আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তৈরি অস্থায়ী থানায় নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে বসেছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার। সঞ্জয়কে মত্ত অবস্থায় দেখে পুলিশ আধিকারিকরা প্রশ্ন করেন, আপনি নেশা করে আছেন? নির্বিকার সঞ্জয় উত্তর দেয়, ইয়েস স্যর।

পুলিশ আধিকারিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন, আপনার হেডফোনটা কোথায়? সঞ্জয় উত্তর দেয়, কোথায় আছে, বলতে পারছি না। নিহত চিকিৎসকের মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া হেডফোন দেখানো হয়, সঞ্জয়কে। পুলিশ আধিকারিকরা প্রশ্ন করেন, এটা আপনার হেডফোন? সঞ্জয় উত্তর দেয়, না তো।

পুলিশ আধিকারিকরা সঞ্জয়ের ফোনের ব্লুটুথ অন করতেই কানেক্ট হয়ে যায় হেডফোন। পুলিশ সূত্রে খবর, এরপর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে অপরাধের কথা স্বীকার করে নেয় সঞ্জয় রায়। পুলিশ আধিকারিকরা প্রশ্ন করেন, কেন খুন করলেন? সঞ্জয় বলে, চিৎকার করে কাউকে বলে দেবে তাই করেছি।

পুলিশ সূত্রে দাবি, ঘটনার দিন দীর্ঘক্ষণ আগে থেকেই আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ছিল সঞ্জয়। রাতে আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে মদ খায় সে। এরপরই সে চলে যায় চারতলার সেমিনার হলে। সেখানে তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন মহিলা চিকিৎসক। সেইসময় তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সঞ্জয়।

পুলিশ সূত্রে দাবি, ছোটোবেলায় বক্সিং শেখা সঞ্জয় একহাত দিয়ে চেপে ধরে চিকিৎসকের মুখ। অন্যহাতে গলা টিপে ধরে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ভয়াবহ কাণ্ড ঘটানোর পর বিধাননগরের সশস্ত্র আরক্ষা বাহিনীর ব্যারাকে ফিরে আসে সঞ্জয়। ফের মদ খায়। ঘুমিয়ে পড়ে। পুলিশ সূত্রে দাবি, আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় জুতো। যাতে রক্ত লেগে ছিল। সঞ্জয় রায়ের শরীরেরও বেশ কিছু আঁচড়ের দাগ মিলেছে।

তদন্তকারীরা মনে করছেন, বাঁচার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন ওই চিকিৎসক। প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিলেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন