মুম্বইয়ে BMW-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মিহির শাহ। যিনি শিবসেনা নেতার ছেলে। ওয়ারলি হিট অ্যান্ড রান ঘটনার একদিন পরই নিখোঁজ হয়ে যায়। জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় একজন ৪৫ বছর বয়সী মহিলা মৃত্যু হয়। সম্প্রতি ৬টি পুলিসের দল তাঁকে খুঁজছে।
মিহির শাহ পালঘর জেলার শিবসেনা নেতা রাজেশ শাহের ছেলে। শাহ পরিবারের কনস্ট্রাকশনের ব্যবসা।
২৪ বছরের মিহির ক্লাস ১০ অবধি পড়াশোনা করেছে। তারপরে বাবার ব্যবসায় যোগ দেয়। জানা গিয়েছে, ঘটনার পর মিহির তাঁর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। এবং ঘটনা সম্পর্কে জানায়। তারপরে নিজের ফোন বন্ধ করে দেয়। পুলিসের সন্দেহ যে, তার বান্ধবী তাকে গা ঢাকা দিতে সাহায্য করছে।
অন্যদিকে, পালঘরের শিবসেনার উপনেতা রাজেশ শাহ মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের ঘনিষ্ঠ। তিনি পালঘরের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উপর তার প্রভাবের জন্য পরিচিত। শাহ এমআইডিসি এলাকায় স্ক্র্যাপ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন এবং নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করেন। মিহির অবশ্য তাদের বোরিভালি বাড়িতে থাকে এবং পালঘরে তেমন পরিচিত নয়।
৬ জুন শনিবার রাতে জুহুর এক পানশালায় মিহির গিয়েছিল বন্ধুদের সঙ্গে। সেখান থেকেই গভীর রাতে নিজেই ড্রাইভ করে ফিরছিল। পাশে বসেছিল তার ড্রাইভার রাজেন্দ্র সিং বিজাওয়াত। অন্যদিকে, নাভখা বাজার থেকে কেনাকাটা করে স্ত্রী নিয়ে ফিরছিলেন স্বামী স্কুটিতে করে। মিহিরের বেপরোয়া গতির জেরে দম্পতির বাইকে ধাক্কা দেয়। ঘটনায় স্বামী গুরুতর আহত হয়।
এখানেই শেষ নয়, মিহিরের গাড়ির গতি এতটাই ছিল যে, সে স্কুটারে ধাক্কা মারার পর ওই মহিলা তার গাড়িতর বনেটে আছাড় খেয়ে পড়েন। এরপর ওই মহিলাকে টেনে হিঁচড়ে প্রায় ১কিমি পর্যন্ত নিয়ে যায় মিহির। তারপর মাঝরাস্তাতেই তাঁকে ফেলে পালিয়ে যায় সে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, মৃত্যু হয় ৪৫ বছরের ওই মহিলার। ঘটনাটি ঘটে, ভোর ৫.৩০ টার দিকে। মনে করা হচ্ছে, ঘটনার সময় মিহির আকন্ঠ মদ্য়পান করেছিল। ঘটনাটির পুরো কাণ্ড সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। সেখান থেকেই মিহিরকেই অভিযুক্ত বলে ধরা হয়।
ঘটনার পরে, মিহির গাড়ি থেকে শিবসেনার স্টিকার এবং নম্বর প্লেট খুটে তোলার চেষ্টা করে। এরপরে সে বান্দ্রা কলানগরে গাড়িটি ফেলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। আরও জানা যায়, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর মিহির তার প্রেমিকার বাড়িতে যায়। তবে সেখান থেকেও সে পরে পালিয়ে যায়। পুলিস তার প্রেমিকাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে।ইতোমধ্যে ঘটনায় অসহযোগিতার জন্য নেতা রাজেশ শাহ এবং ড্রাইভার রাজেন্দ্র সিং বিজাওয়াতকে গ্রেফতার করেছে ওরলি পুলিস। সোমবার তাদের আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় জড়িত BMW গাড়িটি রাজেশের নামে। এবং সেটি বান্দ্রা থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে, মিহিরের বিরুদ্ধে বেপরোয়া গাড়ি চালানো, অনিচ্ছাকৃত হত্যা এবং মোটর যান আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন