নীতীশ কুমার এবং চন্দ্রবাবু নাইডুর ওপর ভর করেই তৃতীয়বার পথ চলা শুরু করল তৃতীয় এনডিএ সরকার। মন্ত্রিসভায় এলেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জেডিএসের এইচডি কুমারস্বামী, টিডিপির রামমোহন নাইডু, এলজেপির চিরাগ পাশোয়ান, জেডিইউয়ের রাজীব রঞ্জন সিং ওরফে লালন সিং। আরএলপির জয়ন্ত চৌধুরীকেও মন্ত্রিসভায় সামিল করা হয়েছে। পাশাপাশি বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার নেতা জিতন রাম মাঁঝি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পদে শপথগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদির পরেই একে একে শপথগ্রহণ করেন রাজনাথ সিং, অমিত শাহ, নীতিন গড়করি এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ও রাজ্যসভার সাংসদ জেপি নাড্ডা। এদিনের মন্ত্রিসভায় বেশ কয়েকটি বড় চমক রয়েছে। তারমধ্যে রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহ্বান। সে রাজ্যে বিজেপি জয়লাভ করলেও মুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁকে আর বসায়নি বিজেপি নেতৃত্ব। তখনই তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করার আশ্বাস দেওয়া হয়। আজ সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে পঞ্চম মন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেন শিবরাজ সং চৌহ্বান। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টারকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সামিল করেছে বিজেপি। এবার লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি ওড়িশা বিধানসভা নির্বাচন হয়। সেখানে বিজেডিকে সরিয়ে ক্ষমতা দখলের পুরস্কার দিলেন মোদি-শাহ-নাড্ডা ত্রয়ী। উৎকল থেকে মন্ত্রিসভায় আনা হল তিনমুখ, ধর্মেন্দ্র প্রধান, অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং জুয়েল ওঁরাও। তবে তিনজনের মধ্যে ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং অশ্বিনী বৈষ্ণব সপ্তদশ লোকসভায় মোদি মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। জুয়েল ওঁরাও প্রথম মোদি সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। রবিবার সন্ধেয় রাইসিনার রাজপ্রাসাদে জোট সরকারের মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন ৭২ জন। তাঁদের মধ্যে পূর্ণ মন্ত্রী ৩০ জন, স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী ৫ জন এবং রাষ্ট্রমন্ত্রী ৩৬ জন।
পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বেয়ন্ত সিং এর নাতি এবং কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া রবনীত সিং বিট্টুকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সামিল করেছে বিজেপি। পাঞ্জাবের লুধিয়ানা থেকে কংগ্রেস প্রার্থী অমরিন্দর সিং রাজার বিরুদ্ধে পরাজিত হন তিনি। যদিও তাঁকে মন্ত্রিসভায় রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া উত্তরপ্রদেশের নেতা জীতিন প্রসাদকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সামিল করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের মধ্যে বাদ পড়লেন অনুরাগ ঠাকুর। দিল্লিতে গুলি মারো গদ্দারো কো স্লোগান দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন তিনি। সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে চা চক্রেও আমন্ত্রণ পাননি তিনি। পাশাপাশি আমেঠিতে পরাজয়ের কারণে মন্ত্রিসভা থেকে বাড় পড়লেন স্মৃতি ইরানি। এছাড়া নারায়ণ রানেকেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি-সিন্ধুদুর্গ কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেন তিনি। আগের মন্ত্রিসভায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রী ছিলেন নারায়ণ রানে।
এদিন সন্ধ্যা ৭.২০টায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। মূল অনুষ্ঠান শুরুর কিছু আগে পৌঁছান নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী পথে শপথগ্রহণ করলেও, এদিন তাঁর মুখের হাসি ছিল অনেকটাই ম্লান। অনুষ্ঠান শুরুর আগে উপস্থিত অভ্যাগতদের অভিবাদন জানান তিনি। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ, মরিশাস, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটানের রাষ্ট্রপ্রধান।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন