২৬ সপ্তাহে গর্ভপাতের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তবে মেয়েটির স্বাস্থ্যের কথা ভেবে মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করার কথাও বলেছিল আদালত। কিন্তু সময়ের আগেই অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর গর্ভপাত করানো হয় কলকাতা বাঙুর হাসপাতালে।
কেন নির্দেশ অমান্য করে তড়িঘড়ি গর্ভপাত করানো হল তরুণীর, এতে তাঁর স্বাস্থ্যে কোনও প্রভাব পড়বে কিনা তা জানতে চেয়ে হাসপাতালের কাছে রিপোর্ট তলব করে হাইকোর্ট। আজ শুক্রবার বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে এই মামলার শুনানির সময়ে সেই কারণ জানিয়ে যুক্তি দেন চিকিত্সকরা।
বিচারপতির এজলাসে মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দিয়ে চিকিত্সকরা বলেছেন, যদি তাঁরা মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করে সেই রিপোর্ট আসা অবধি অপেক্ষা করতেন, তারপর গর্ভপাতের প্রক্রিয়া শুরু করতেন তাহলে অনেক দেরি হয়ে যেত। তরুণীর স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছিল। শরীর থেকে রক্তপাত হচ্ছিল তাঁর। তাই বেশি দেরি হলে বিপদ হতে পারত। সে জন্যই দ্রুত তরুণীর গর্ভপাত করানো জরুরি হয়ে পড়েছিল।
চিকিত্সকদের বক্তব্য শুনে আশ্বস্ত হন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, 'ডাক্তার সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। মেয়েটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। তাই ডাক্তারের বিরুদ্ধে অবমাননাকর ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।' বিচারপতি আরও বলেন, মেয়েটি সুস্থ আছে ও তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তাই এই মামলাটির আর কোনও গুরুত্ব নেই। মামলাটির নিষ্পত্তি করা হল।
কলকাতার গল্ফগ্রীন এলাকার বাসিন্দা ২৭ বছরের এক যুবতী অভিযোগ করেছিলেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন সহবাস করা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। তরুণীর অভিযোগ, ২০১৮ সালে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। তার পর থেকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে একাধিক বার সহবাস করেছেন ওই যুবক। তরুণীর অভিযোগ, এখন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার পর ওই যুবক তাঁকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন। এই পরিস্থিতিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে গর্ভপাতের অনুমতি চেয়েছিলেন তরুণী। গর্ভপাত করালে মেয়েটির শারীরিক কোনও সমস্যা হবে কিনা তা জানতে চেয়েই মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন