শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সদর্থক ও ইতিবাচক ভূমিকা অনেক আগে থেকেই নিতে শুরু করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্য দিতে চাইলেও আইনি জটে আটকে রয়েছে অনেক নিয়োগ। ধীরে ধীরে সেই জট খুলছে। এরই মধ্যে গত, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে গিয়ে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের (Kishore Dutta)সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা হয় তাঁদের দু'জনের মধ্যে। তখন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) জানিয়েছিলেন এসএলএসটি শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষা চাকরিপ্রার্থীদের তরফে তিনি অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে দেখা করে মামলায় বিষয়ে কথা বলেন। অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, মামলার পরবর্তী শুনানির দিন রাজ্যের পক্ষ থেকে 'সদর্থক ভূমিকা' নেওয়া হবে। সেইমত এদিন শুনানি হয়। এবং সেই শুনানি ছিল যথেষ্ট ইতিবাচক। এই মামলার নিয়োগ জট খুলছে এবং আগামী সোমবার চূড়ান্ত পদক্ষেপ হতে পারে।
আজ বুধবার হাইকোর্টে শুনানির একটি তাত্পর্যপূর্ণ টুইট করেন কুণাল ঘোষ। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, "এসএলএসটি শারীরশিক্ষা, কর্মশিক্ষা জট খোলার দিকে আরেক ধাপ। আজ হাইকোর্টে ইতিবাচক শুনানি। আগামী সোমবার বড় পদক্ষেপের সম্ভাবনা। ধন্যবাদ মাননীয় অ্যাডভোকেট জেনারেল। মনে রাখুন, মমতা বন্দোপাধ্যায় নিয়োগের সব ব্যবস্থা করে দিলেও বিরোধীদের অন্যায্য মামলার জটে আটকে ছিলেন যোগ্যরা। আশা করি, শিগগিরই সবার মুখে হাসি ফুটবে। জট কাটার দিকে এগোচ্ছে।"
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কুণাল বলেন, "এসএলএসটি শারীরশিক্ষা, কর্মশিক্ষা জট খোলার দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু এদিনও কিছু বিরোধী আইনজীবী মরিয়া হয়ে তা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ন্যায্য ও বৈধ প্রার্থীদের চাকরি থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন। অহেতুক জটিলতা তৈরির চেষ্টা করছেন ওই আইনজীবীরা। মমতা বন্দোপাধ্যায় নিয়োগের ব্যবস্থা করেন। সুপারিশও হয়ে হয়েছিল। ঠিক নিয়োগ দেওয়ার আগে ভুলভাল প্রার্থীদের দিয়ে মামলা করিয়ে নিয়োগ স্থগিত করিয়ে ন্যায্য প্রার্থীদের চাকরি থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন বিরোধী আইনজীবীরা।"
আদালতের ঘটনা বর্ণনা করে কুণাল বলেন, "মাননীয় বিচারপতি ওই বিরোধী আইনজীবীদের অর্থাত্ যাঁরা চাকরিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁদের প্রতি বিরক্ত হয়ে কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। বিচারপতিকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'হু আর ইউ'! এই আইনজীবীরাই ধরনা মঞ্চে নাটক করে আদালতে চাকরি আটকানোর চেষ্টা করছে। এদের মুখ আর মুখোশের পার্থক্য এবার প্রকাশ্যে চলে এলো।"
শুনানি নিয়ে কুণাল আরও জানান, "বিচারপতি অ্যাডভোকেট জেনারেলকে আগামী সোমবার লিখিত একটি বক্তব্য চেয়েছেন এই মর্মে যে, এই ঘটনার সঙ্গে সিবিআই বা অন্য কিছু তদন্তের সম্পর্ক নেই। ফলে সবমিলিয়ে এই মামলায় আটকে থাকা নিয়োগ আইনি জট খোলার পথে। যে জটিলতা ছিল তা অনেকটাই কমার জায়গায়।" এদিন আদালতে শুনানি শেষের পর কুণালের সঙ্গে দেখা করতে আসেন এসএলএসটি শরীরশিক্ষা-কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁরা ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, এবং কুণাল ঘোষকে। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, যে আইনজীবীরা রাত ১২টার সময় ধরনা মঞ্চে গিয়ে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এখন আদালতে তাঁরাই বাধা সৃষ্টি করছেন। ওই আইনজীবীদের উপর ক্ষুব্ধ বিচারপতিও। মিথ্যা মামলা নিয়ে ওই আইজীবীদের বিরুদ্ধে আদালতে জরিমানার কথাও বলা হয়।
অন্যদিকে, চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে কুণাল ঘোষ জানান,"অ্যাডভোকেট জেনারেল, শিক্ষামন্ত্রী, এসএসসি চেয়ারম্যান, এসএসসি আইনজীবী সহ সকলের উদ্যোগে এবং উপরওয়ালার ইচ্ছায় আদালতে ইতিবাচক শুনানি হয়েছে। খুব সময়ের মধ্যে ফের সোমবার শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।আমরা আশাবাদী সোমবার অ্যাডভোকেট জেনারেল ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেবেন। আদালতও বিষয়টি ত্বরান্বিত করবে "
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন