গত বছরের ২১ নভেম্বর উড়িষ্যায় শিক্ষামূলক ভ্রমণে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল বাংলার এক পড়ুয়ার। আশুতোষ কলেজের ওই ছাত্রের দেহ উদ্ধার হয় উড়িষ্যার কেওনঝড়ে। এবার সেই ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের করল মৃতের পরিবার। যার ফলে কেওনঝড় পুলিশের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, গত ২১ নভেম্বর আশুতোষ কলেজের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের ৩৮ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে কেওনঝড় ও বারবিলে শিক্ষামূলক ভ্রমণে নিয়ে যান অধ্যাপকরা।
বারবিল থেকে কিছুটা দূরে একটি নদী এবং জলপ্রপাত দেখার জন্য নামেন পড়ুয়ারা। সেই জলপ্রপাত দেখার সময় ঘটে যায় দুর্ঘটনা। ঝরনাকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে সেলফি তোলার চেষ্টা করছিলেন দুই ছাত্র। তারপরেই তাঁদের আর কোনও খোঁজ মেলেনি। ওই দু'জনের একজন ছিলেন হুগলির আরামবাগের বাসিন্দা তারাশংকর সরকার। ঘটনার দু'দিন পরে তারাশংকরের মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
পুলিশ জানায়, ঝরনার জলে পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলেন দুজন। তারাশংকরের সঙ্গে অন্য যে ছেলেটি ছিলেন তাঁর নাম নীলাব্জ। একটি পাথরের খাঁজে আটকে বেঁচে যান তিনি। তবে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। অন্যদিকে, হুগলির আরামবাগের বাসিন্দা তারাশঙ্কর পড়াশোনার জন্য সল্টলেকে থাকতেন। তিনি একজন ইউটিউবারও ছিলেন। আর সেই জন্য ছবি ছবি, ভিডিও সংগ্রহ করতে গিয়েই কি দুর্ঘটনা ঘটে যায়, সে নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। মৃত ছাত্রের বাবা প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক। এই ঘটনার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং অধ্যাপকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। তারাশংকরের পরিবার দাবি করে, দুর্ঘটনা নয় খুন করা হয়েছে তাঁদের ছেলেকে।
হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে ছাত্রমৃত্যুর এই ঘটনার মামলা চলছে। মৃতের পরিবারের তরফে আইনজীবী দাবি করেছেন, ঘটনার খবর পাওয়ার পর স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানাতে গেল অভিযোগ নেওয়া হয়নি। বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, হুগলির পুলিশ সুপার যেন অবিলম্বে কেওনঝড় পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ঘটনার প্রেক্ষিতে কোনও এফআইআর দায়ের হয়েছে কিনা তাও কেওনঝড়ের পুলিস সুপারকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ১৪ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন