Top News

সন্ধ্যায় বিদিশা দে মজুমদারের রহস্যজনক মৃত্যু


বিদিশা দে মজুমদার : ২০২২-এর ২৫ মে মডেল বিদিশা দে মজুমদারের দমদমের বাড়ি থেকে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় ব্যারাকপুর পুলিশ সূত্রে খবর যারা অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশ করেছিল। 

এর পরে ব্যারাকপুর থানার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং মজুমদারের দেহ পোস্টমর্টেমের জন্য আরজি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। যদিও পোস্টমর্টেম রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত অভিনেত্রী আত্মহত্যা করে মারা গেছেন কিনা তা চূড়ান্তভাবে বলা যাবে না, ইন্ডিয়া টুডে সূত্রের বরাত দিয়ে পুলিশ অভিনেত্রীর ফ্ল্যাট থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে।
এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা সুইসাইড নোট অনুযায়ী, 
বিদিশা লিখেছেন, তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। তাঁর কাজের পরিমাণ কমে গিয়েছিল। ওই সুইসাইড নোট অনুযায়ী, ইএমআই, তাঁর ব্যক্তিগত খরচ, বাড়িভাড়া ইত্যাদি চালাতে তাঁর সমস্যা হচ্ছিল। তিনি জানিয়েছেন, নিজের বাড়িতেও তিনি ভাল ছিলেন না। শেষে তিনি লিখেছেন তিনি আত্মহত্যা করেই খুশি।

বিদিশার বাবা-মা ইতিমধ্যে নাগেরবাজার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং এটি এখন একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা।

এবার ফের প্রশ্ন উঠেছে বিদিশার আত্মহত্যা নিয়ে। তার ফেসবুকের কভার ফটো এবং ক্যাপশন প্রশ্ন তুলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ভাইরাল হচ্ছে যে বিদিশা একজন লেসবিয়ান ছিলেন। কারণ তিনি তার ফেসবুকে তার বিশেষ বন্ধুর সাথে একটি ছবি শেয়ার করেছেন যাতে তারা নগ্ন এবং শুধুমাত্র একটি সাদা রঙের পোশাক পরে রয়েছে। এছাড়াও তিনি ক্যাপশনে লিখেছেন, লাভ ইউ বিউ- গুরিয়া, রুশা। এই গোটা ঘটনার পর বিদিশার যৌন অবস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।
একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিদিশার এক বন্ধু বলেছেন যে অভিনেত্রী তার পোস্টে তার মহিলা বন্ধুদের স্ত্রী হিসাবে উল্লেখ করেছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে অভিনেত্রী যে মেয়েটির সাথে ছবিটি শেয়ার করেছেন তিনি হতবাক হয়ে পড়েছেন। ওই নারী তার পরিচয় জানাতে রাজি হননি। ওই নারী বিদিশার সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা তার বন্ধুদের জানান।
বিদিশার সঙ্গে ছবিতে যে মহিলা বন্ধুকে দেখা যাচ্ছে তিনি হলেন রুশা মুখার্জি

এই পোস্টে বিদিশার সঙ্গে দেখা অভিনেত্রীর নাম রুশা মুখার্জি। বাঙালি অভিনেত্রীকে বেশিরভাগ দাম্পত্যের ফটোশুটে দেখা যায় এবং টিভি শো এবং চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন।

তার বন্ধুদের মতে, বিদিশা 2019 সালে ফ্রিল্যান্স মডেলিং শুরু করেন এবং নাগেরবাজার অ্যাপার্টমেন্টে একা থাকতেন। যাইহোক, কেউ কেউ বলছেন যে তিনি দেরিতে হতাশায় ভুগছিলেন এবং তার বন্ধুদের বলেছিলেন যে কিছু পরিবর্তন না হলে তিনি তার জীবন শেষ করবেন। উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিনেত্রী একটি জিম প্রশিক্ষকের সাথে একটি ঝামেলাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে ছিলেন এবং তার প্রেমিক একাধিক সম্পর্কের কারণে তিনি হতাশ ছিলেন। "তার প্রেমিকের সাথে তার একটি উত্তপ্ত সম্পর্ক ছিল, যা সে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সাথে আলোচনা করেছিল।

বিদিশা দে মজুমদারের অনুভবেরা নামে একটি প্রেমিক ছিল বলে জানা গেছে, এবং তার বন্ধুরা দাবি করেছে যে তার রোমান্টিক সম্পর্কের সমস্যার কারণে তিনি বিষণ্নতায় ভুগছিলেন। অভিনেত্রী পল্লবী দে-এর জীবনের সাথে তার রোমান্টিক জীবনের একটি অদ্ভুত সমান্তরাল ছিল, যিনি এই মাসের শুরুতে মারা যান।

নামহীন সূত্রগুলি একটি সংবাদ মিডিয়া সংস্থার কাছেও প্রকাশ করেছে যে মৃত অভিনেতা বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন এবং তার মৃত্যুর খবর প্রকাশের কয়েকদিন আগে কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। একটি স্থানীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে যে তার মাসিকের কিছু সমস্যা ছিল এবং তিনি একজন ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন এবং তাকে একটি সোনোগ্রাফি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। জানা গেছে, কাজের চাপের কারণে তার চিকিৎসা করার সময় ছিল না। এগুলিকে অভিনেতার আত্মহত্যার অভিযোগের কারণ হিসাবে দেখা হয় বলে জানা যাচ্ছে | তবে তার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও প্রকাশ করা হয়নি। আরো বিস্তারিত অপেক্ষিত |

এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রয়াত মডেল-অভিনেত্রী বিদিশা দে মজুমদারের বান্ধবী জানান যে, 
মৃত্যুর আগের রাতেই তাঁকে মেসেজ করেছিলেন বিদিশা। কী লেখা ছিল সেই মেসেজে? বিদিশার বান্ধবী জানাচ্ছেন, যে যুবকের সঙ্গে গত পাঁচমাস ধরে সম্পর্কে ছিলেন বিদিশা, তাঁর সম্পর্কে একাধিক কথা লিখেছিলেন তিনি। বান্ধবী বলছেন, 'আমাকে রাত ১টা নাগাদ ও (বিদিশা) হোয়াটসঅ্যাপ করে। তাতে লেখা ছিল, 'আমি ওকে খুব ভালোবাসি। ওকে ছাড়া আমি থাকতে পারব না। কারও সঙ্গে ওকে আমি ভাগ করে নিতে পারব না।' ওর মেসেজ পেয়েই আমি ওকে ফোন করতে থাকি। কিন্তু ওর ফোন ওয়েটিং ছিল। ফের ভোর চারটে নাগাদ ওর সঙ্গে আমার কথা হয়। আমি জিজ্ঞাসা করি যাব কিনা। কিন্তু ও বলে এখন আসতে হবে না। সকালে আসার কথা বলে। আমি ভাবি বিকেলে দেখা করব। সন্ধেবেলাও ওর সঙ্গে আমার ফোনে দেড় ঘণ্টা কথা হয়। কিন্তু সন্ধ্যেবেলা যে সব শেষ হয়ে যাবে, তা ভাবতেও পারিনি।' 

বিদিশার এক বান্ধবী রিয়া দাস বলেন, “আমার কাছে সমস্ত প্রমাণ আছে। অনেক কথার কল রেকর্ডিংও আছে। এই ঘটনার পর আমি ফোন করে বলেছিলাম, ‘অনুভবদা তুমি কি আসবে না?’। মুখের উপর না বলে দেয়।” যদিও অনুভব ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন, বিদিশার সঙ্গে তাঁর শুধুই বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। অনুভব বেরা বলেন, “এই যে আমি বিদিশার কেয়ার করতাম, মানসিক শক্তি জোগাতাম এটা ওর ভাল লাগত। আমাকে প্রপোজও করে। কিন্তু আমি না করে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম বন্ধু হিসাবেই তোমার পাশে থাকতে চাই।

একইসঙ্গে অনুভব দাবি করেছেন, “আমার সঙ্গে ওর যতদিনের পরিচয়, প্রথম থেকেই ও হতাশায় ভুগত। আগে ও দু’বার সুইসাইড করতে গিয়েছিল, ও নিজেই বলেছিল। মনে হয় হতাশার কারণেই তা করেছিল।” অনুভবের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ বিদিশার। সেখান থেকেই পরিচিতি। অনুভব তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, “এর আগে বহুবার অডিশন দিতে গিয়েছিল বিদিশা। কিন্তু সাফল্য আসেনি। আমি কিন্তু ওকে সবসময় মানসিক শক্তি জুগিয়েছি। ও আমাকে বহুবার বলেছে, ‘যেখানেই অডিশন দিচ্ছি, বাদ পড়ে যাচ্ছি। আমি এটা আর নিতে পারছি না’।

যদিও অনুভবের কথা মানতে চাননি বিদিশার বান্ধবী। তাঁর দাবি, বিদিশা ছাড়া আরও কয়েকজন মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অনুভবের।
[ কিন্তু Newstapবাংলা মানে না যে এটা শুধুই আত্যহত্যা 
আরো কোন কিছু লুকিয়ে আছে ] 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন