একটি 13 বছরের মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং তার প্রতি নিষ্ঠুরতার মাত্রা অতিক্রম করা হয়েছিল। তার চোখ বের করা হয়েছে এবং উভয় স্তন কেটে ফেলা হয়েছে। এর পর তাকে হত্যা করা হয়।
প্রকৃতপক্ষে, মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা তার চোখ বের করে তার স্তন কেটে ফেলার অভিযোগ করেছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে, পরিবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় এবং জানায় যে তাদের মেয়ের সাথে খুব অমানবিক কাজ করা হয়েছে। তাই তার শরীর পুনরায় পরীক্ষা করা উচিত। হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) বেঙ্গল পুলিশ তার লাশ কবর থেকে তুলে নেয়।
প্রায় 20 দিন পর পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদেহটিকে কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য কলকাতার এসএসকেএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসলে এই ঘটনায় নাবালক ছেলে ও তার বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরীক্ষা শেষে লাশও দাফন করা হয়।
অভিযোগ ছিল, মেয়েকে ধর্ষণ ও হত্যার পর অভিযুক্ত পিতা-পুত্র নির্যাতিতার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র করে তাতে এসিড ঢেলে দেয়, যাতে দ্রুত পচন ধরে। তদন্ত প্রতিবেদনে এসব কিছু উল্লেখ থাকলেও প্রথম ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে এ ধরনের নিষ্ঠুরতার কোনো উল্লেখ ছিল না। পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন, কেস ডায়েরি ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ভিন্ন কথা ছিল।
পুরো ঘটনাটি মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া এলাকার। এখানে 13 বছরের একটি মেয়ে পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ ছিল। অবশেষে ২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারি গ্রামের সরিষা ক্ষেতে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। মেয়েটির শরীর বিকৃত করা হয়েছে। তার ঘাড়ের চারপাশে একটি ফাঁস ছিল এবং তার চোখ দুটি ফুলে উঠছিল। এরপর মেয়ের পরিবার বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
একইসঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৬ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে মেয়েটি বাইরে যায়। এরপর আর ফেরেননি। পরিবার ও স্বজনরা সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পাননি। মেয়েটি যে ঘরে থাকত সেখানে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। তাতে লেখা ছিল, 'চিন্তা করবেন না।' পরের দিন বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে সরিষা ক্ষেতে মেয়েটির লাশ পাওয়া যায়।
বিষয়টির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবিতে পরিবারটি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের একক বেঞ্চ বলেন, যেহেতু প্রথম পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এবং তদন্ত রিপোর্টের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তাই ভিকটিমের দেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রয়োজন। এ বিষয়ে পুলিশের কাছে কেস ডায়েরিও চেয়েছে হাইকোর্ট। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে 6 মার্চ, 2024-এ।
মেয়েটির প্রতি বর্বরতা নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা অপরাধীদের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। উত্তেজনাকর পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কবর থেকে লাশ উত্তোলনের সময় পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল। চারদিকে বেড়াও দেওয়া হয়েছিল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন