Top News

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী ছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে তোলপাড়


 এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় বিশ্ববিদ্যালয়ে। মহিলা হোস্টেলের পুরাতন ব্লকে বসবাসকারী ছাত্রীর পরিবারের দাবি, ঘুমের ওষুধ খেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ওই ছাত্রী। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ও গবেষকের বিরুদ্ধে পরিবার। দুজনের বিরুদ্ধেই বন্ধুত্বের নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনেরও অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মেয়ের বাড়ি জলপাইগুড়ির মালবাজারে। দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে থাকত। কয়েকদিন আগে তিনি দেশে ফিরেছেন। 18 জানুয়ারি পরিবারের সদস্যরা ছাত্রীকে তার নিজের ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এরপর তিনি স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ ওই ছাত্রের ফোন কল রেকর্ড পরীক্ষা করেছে। এখান থেকেই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও গবেষকের নাম এসেছে।মৃত্যুর আগেও ওই ছাত্রী বেশ কয়েকবার দুজনের সঙ্গে কথা বলেছিল। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে পরিবারের অভিযোগ। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়।

অভিযোগ, ওই ছাত্রীর বাবা গত ২৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। ওই অভিযোগপত্রে তিনি লিখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগের এক ছাত্র এবং বাংলা বিভাগের এক গবেষক মিলে তাঁর মেয়েকে শারীরিক, মানসিক অত্যাচার করত
 যে কথা মৃত্যুর আগে পরিবারকে ওই ছাত্রী জানিয়েছিলেন বলেও দাবি। এমনকী জোর করে ওই ছাত্রীকে নেশা করানোর অভিযোগও উঠেছে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বন্ধুত্বের নামে প্রতারণা করেছেন দুজনেই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতটুকু করণীয় তা বলতে পারব না। ঘটনাটি ছাত্রের বাড়িতে হওয়ার পর থেকেই। আগামী সপ্তাহে বৈঠকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশেষ সক্ষম শিক্ষার্থীদের আহ্বায়ক আনিফুর ইসলাম বলেন, “আইন আইন অনুযায়ী চলবে। যেহেতু আসামিরা বিশেষভাবে সক্ষম, তাই বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। 

আজ বিশ্ববিদ্যালয় স্থির করেছে যে এই তদন্ত যখন চলবে তখন এক অভিযুক্ত ছাত্র যে এখন হোস্টেলে থাকে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারবে না। অন্যদিকে ছাত্রী যে বিভাগের সেই বিভাগের প্রধান তিনি জানিয়েছেন, ছাত্রীর উপর কোন মানসিক চাপ রয়েছে তা ছাত্রীটি কোনও দিনই তাদেরকে জানায়নি। 
এমনকী মৃত্যুর আগে নাকি এক সিনিয়র ছাত্রীকে ফোন করেছিল নির্যাতিতা। সূত্রের খবর, মৃত্যুর আগের দিন ওই দৃষ্টিহীন ছাত্রী ফোন করে বলেছিল যে 'তুমি আমাকে বিক্রি করার ব্যবস্থা করে দিতে পারবে'। প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয় জলপাইগুড়ির মালবাজারে।

১নম্বর আপডেট : আরো একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য আসছে জানা যাচ্ছে, অভিযুক্ত ছাত্র (তিনিও দৃষ্টিহীন) তাঁর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ওই ছাত্রীর। অভিযুক্ত ওই ছাত্রের বক্তব্য, ৪ জানুয়ারি দৃষ্টিহীন ছাত্রী জানান, তিনি আর সম্পর্কে থাকবেন না। ১৭ জানুয়ারি ফোন আসে ওই ছাত্রের কাছে। দীর্ঘক্ষণ কথা হয় দু’জনের। অভিযুক্ত ছাত্রের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন ওই ছাত্রী। ছাত্রীর জন্য অভিযুক্তের ছিল ‘ ট্রু লভ’ | উল্টে ছাত্রীর বাবা-মায়ের দিকেই অভিযোগ করছেন অভিযুক্ত ছাত্র। 

২নম্বর আপডেট : তিনি বলেন, “আমাদের কিন্তু ট্রু রিলেশনশিপ ছিল। ৪ জানুয়ারি ও আমাকে জানিয়ে দেয়, আর আমার সঙ্গে সম্পর্কে থাকবে না। আমি ওকে চাপ দিই নি। ওর একটা ক্রনিক ডিসঅর্ডার রয়েছে। ১৭ তারিখ ওই আমাকে ফোন করে। ভালভাবে কথা বলে। বলে, আমি ঠিক হয়ে গিয়েছি। আমার আর কোনও ওষুধ চলছে না। আমার কাছে গোটা ঘটনার অপ্রত্যাশিত। আমি আমার কাছের একজন মানুষকে হারালাম।” 

• ৩ নম্বর আপডেট : ওই ছাত্রের বক্তব্য, “এক মুহূর্তের জন্য আমি কখনও ভাবিনি, ওকে ভুলে যাব, ওকে দূরে সরিয়ে রাখব, কখনও ভাবিনি। এখন আমার কাছে দুদিকেই বিপদ। কারণ আমি আমার কাছের মানুষকে হারিয়েছি। আর ক্যাম্পাসেও আমাকেই দোষী তকমা দেওয়া হচ্ছে।”  

• ৪ নম্বর আপডেট : তিনি আবারও বলেন, “আমি কোনওভাবেই ওকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দিইনি। আমার দিকে ও ছিল ট্রু লভ! ও মাঝেমধ্যেই বলত, আমি মরেই যাব। সুইসাইড করে নেব। ও খুব ওভার থিঙ্কিং করত। ওর চিকিৎসাও চলছিল।”

৫ নম্বর আপডেট : অভিযুক্ত ছাত্র স্পষ্ট করেন, “পুলিশ তদন্ত করলেই আসল সত্য সামনে আসবে। এটা আমার জন্যও খুব জরুরি।” প্রসঙ্গত, ১৮ জানুয়ারি মালবাজারের বাড়ি থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ, এই অভিযুক্ত ছাত্র ও আরেক গবেষক ছাত্র তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন। যা নিয়ে শোরগোল যাদবপুরে।
৬ নম্বর আপডেট
বিস্ফোরক অপসারিত উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। 
তিনি বললেন. ” অ্যান্টি র‌্যাগিং স্কোয়াড করে দেওয়া হয়েছে। কমিটির সদস্য সংখ্যাও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপরও এই ঘটনা এড়ানো যেত। তবে এই ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয়। এগুলো ম্যানেজ করতে গেলে মনিটারিং করে যেতে হবে। প্রত্যেকটা বর্ষের জন্য হস্টেল আলাদা করে দেওয়া উচিত ছিল।” তিনি আরও বললেন, “যাদবপুরে ড্রাগ অস্বাভাবিক নয়। অন্যায় কাজ যে এখানে চলতে পারে, সেটা অস্বাভাবিক নয়। এখন তদন্তের প্রয়োজন। এখন ছাত্ররা চুপ করে রয়েছেন কেন? আমার মনে হয়, এই ঘটনাকেও অ্যান্টি র‌্যাগিং স্কোয়াডেই পাঠানো উচিত।

• ৬ নম্বর আপডেট : কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিকে (আইসিসি) নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান প্রতিবন্ধী সহকর্মী ছাত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগের তদন্ত করতে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত দুই ছাত্রের মধ্যে একজনকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছে যে যতক্ষণ না পর্যন্ত প্যানেল বিষয়টির চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করছে ততক্ষণ পর্যন্ত জাবি ক্যাম্পাসে প্রবেশ না করতে।

• ৭ নম্বর আপডেট :অভিযুক্ত ছাত্রটিও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্যানেল 12 ফেব্রুয়ারি এই বিষয়ে তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন দেবে। কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন এক মাসের মধ্যে প্রকাশিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন