একটি জমি সংক্রান্ত মামলায় নিজের প্রভাব খাটাচ্ছেন কলকাতা হাই কোর্টের এক মহিলা বিচারপতির স্বামী। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ উঠেছে। এই মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। সংশ্লিষ্ট মামলাটির তদন্তে আপাতত আছে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি। এই আবহে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি এলভিএন ভাট্টির ডিভিশন বেঞ্চ সিআইডিকে 'ভয় না পেয়ে' এই মামলার তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিল।
বার অ্যান্ড বেঞ্চের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, এক জমি সংক্রান্ত মামলায় এক বিধবা মহিলা এবং তাঁর মেয়ের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়েছে হাই কোর্টের বিচারপতির স্বামীর। জানা গিয়েছে, বিচারপতির স্বামী নিজেও পেশায় আইনজীবী। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন সেই বিধবা মহিলা এবং তাঁর মেয়ে। এই আবহে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, বিচারপতির স্বামী যদি এই মামলায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেন বা প্রভাব খাটাতে চান, তাহলে যেন সিআইডি তা শীর্ষ আদালতকে জানায়।
এদিকে এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে সিআইডিকে ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই তদন্ত রিপোর্ট তারপর মুখবন্ধ খামে শীর্ষ আদালতে পেশ করতে হবে সিআইডি তদন্তকারীদের। রিপোর্ট অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টে আবেদনকারী বিধবা জানিয়েছেন, পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক অশান্তি শুরু হয়। এই আবহে তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁর দাদা এবং আত্মীয়রা। তাঁকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোয়। সিসিটিভিতে নাকি সেই ঘটনা ধরাও পড়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে নিজের আত্মীয়দের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেছিলেন বৃদ্ধা বিধবা। এদিকে সেই মামলায় বিবাদী পক্ষের হয়ে সওয়াল জবাব করছেন হাই কোর্টের বিচারপতির স্বামী। সুপ্রিম কোর্টে বৃদ্ধার অভিযোগ, সেই আইনজীবী ঘটনার তদন্তে বাধা সৃষ্ট করতে প্রভাব খাটাচ্ছেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনকারী বৃদ্ধার আবেদন, আইনজীবী কিংবা তাঁর বিচারপতি স্ত্রীর প্রভাব যেন এই মামলার তদন্ত সম্পন্ন হয়। এদিকে মামলাকারী বৃদ্ধার অভিযোগ, তদন্তকারীকে ডেকে নাকি হাই কোর্টের বিচারপতি ভর্ত্সনা করেছিলেন। তিনি নাকি তদন্তকারীকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘দু'টি দেওয়ানি মামলায় কেন ফৌজদারি মামলার তদন্ত হচ্ছে?’ এদিকে এই মামলার প্রেক্ষিতে রাজ্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টকে বলা হয়েছে, তদন্ত নিজের গতিতেই চলছে। সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছেও নাকি এই নিয়ে রিপোর্ট জমা পড়েছিল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন