Top News

মিশন কমপ্লিট! উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ থেকে বার করে আনা হল ৪১ জন শ্রমিককেই

রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষার অবসান! ১৭ দিন পর মিশন কমপ্লিট!
টানা ২৬ ঘণ্টা ম্যানুয়াল ড্রিলিং বা হাতে খোঁড়ার পর উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ থেকে আটকে থাকা শ্রমিকদের একে একে বাইরে বের করে আনলেন উদ্ধারকারীরা। অন্ধকার গলিপথে স্ট্রেচারে করে তাঁদের সকলকে অক্ষত অবস্থায় বাইরে আনা হয়।

ঘড়ির কাঁটায় রাত সাড়ে আটটা। বাইরে এলেন ৪১ নম্বর শ্রমিক। তুমুল হাততালিতে ফেটে পড়ল উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গস্থল। জয়োধ্বনি উঠল উদ্ধারকারীদের উদ্দেশে। স্বস্তির শ্বাস পরিজনদের চোখে মুখে। আর উদ্ধারকারীদের বডি ল্যাঙ্গোয়েজে যুদ্ধ জয়ের মেজাজ। 

উদ্ধারকারী দল সূত্রে খবর, সুড়ঙ্গের মধ্যে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিকই সুস্থ আছেন। তাঁদের একে একে বের করে অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অস্থায়ী হাসপাতালে। সেখানেই চিকিত্‍সকরা শ্রমিকদের চিকিত্‍সা শুরু করবেন। মজুত আছে পর্যাপ্ত অক্সিজেন।

চারধামে যাতায়াতের জন্য উপযোগী রাস্তা তৈরি করার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছিল উত্তরাখণ্ড সরকার। আর সেই প্রকল্পের অধীনেই চলছিল সিল্কয়ারা টানেলের কাজ। এই কাজ চলাকালীন গত ১২ নভেম্বর ঘটে বিপত্তি। টানেলের মধ্যে আচমকা ধস নামে। সেইসময় টানেলের মধ্যে কাজ করছিলেন ৪১ জন শ্রমিক। ধস নামার পর আটকে পড়েন তাঁরা।

তারপর থেকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ আর্নল্ড ডিস্কের নেতৃত্বে শুরু হয় উদ্ধার কাজ। মার্কিন যন্ত্র অগার মেশিনের মাধ্যমে সুড়ঙ্গের মধ্যে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করে। কিন্তু গত শুক্রবার আচমকাই সুড়ঙ্গের মধ্যে ধাতব জালে আটকে বিকল হয়ে যায় মার্কিন যন্ত্র। ৩০ ঘণ্টার ওপর বন্ধ হয়ে যায় উদ্ধার কাজ।

শুরু হয় বিকল্প পথের খোঁজ। মার্কিন যন্ত্র অগার মেশিন যখন অকেজো হয়ে যায়, তখন দু'টি বিকল্প পদ্ধতির কথা ভাবা হয়েছিল। এক, মেশিনের সাহায্যে উলম্বভাবে সুড়ঙ্গ খোঁড়া আর দুই, অবশিষ্ট ধ্বংসস্তূপের অংশ শাবল, কোদাল, গাঁইতি দিয়ে খুঁড়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনো। একসঙ্গেই দু'টি পদ্ধতিতে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। এদিন দুপুত্রের দিকেই র‍্যাট হোল মাইনিং পদ্ধতিতে ম্যানুয়াল ড্রিলিং করেই ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ সফল হয়।

উদ্ধারকারী দলের এক সদস্যের কথায়, "যান্ত্রিক গোলযোগ না হলে আরও আগে আমরা আটকে থাকা শ্রমিকদের বাইরে বের করে আনতে পারতাম।" আর এক সদস্য আকাশের দিকে তাকিয়ে দুহাত ঠেকিয়ে বললেন, "ঈশ্বর না থাকলে আমাদের একার পক্ষে এই অসাধ্যসাধন সম্ভব হত না।"

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন