তার মধ্যেই নতুন করে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলেন ৩৫ জন চাকরিপ্রার্থী।
তাঁদের অভিযোগ, প্রথম মেধা তালিকায় নাম থাকলেও পরবর্তী মেধা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় তাঁদের। তাই অবিলম্বে কাউন্সেলিং বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। মামলাকারীরা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের উচ্চ মাধ্যমিক এসএলএসটি পরীক্ষা হয়। মোট শূন্যপদ ছিল ১৪,৩৩৯টি। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে মেধা তালিকা প্রকাশ করে রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন। সেই মেধা তালিকায় অসঙ্গতি থাকার কারণে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের এজলাসে মামলা দায়ের হয়। বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য ২০২০ সালের ১১ ডিসেম্বর ওই মেধা তালিকা বাতিল করে স্বচ্ছ নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশকে অমান্য করেই ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করে। সেখানে প্রথম মেধা তালিকায় যারা ছিল তাদের নাম বাদ দিয়ে অনেকের অ্যাকাডেমিক নম্বর, টেটের নম্বর কম থাকা সত্ত্বেও তা বাড়িয়ে এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয় যারা তাদের নামও সেই নতুন তালিকায় দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
ইন্টারভিউ তালিকায় অসঙ্গতির অভিযোগ জানিয়ে প্রথম প্রকাশ হওয়া মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থীরা বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজ্লাসে মামলা করেন। ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সেই তালিকা বাতিল না করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানোর নির্দেশ দেন মামলাকারীদের।
পরবর্তীকালে এই মামলাটি ডিভিশন বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে প্রথম মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থীরা জানায় এসএসসি যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে সেখানে বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে ও তা ত্রুটিপূর্ণ। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, তালিকাভুক্ত প্রার্থীরা এসএসসির কাছে অভিযোগ জানাবে এবং কোর্টের নজরদারিতেই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলবে। যদিও পরবর্তী সময় বেঞ্চ বদল হয়ে মামলা চলে যায় বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে।
বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ প্রথম মেধাতালিকাভুক্ত প্রার্থীদের এবং এরকম অসংখ্য মামলাকারীদের বক্তব্য না শুনেই ২০২৩ সালের ৮ অগস্ট এসএসসিকে ইন্টারভিউ প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দেন। মামলাকারীদের দাবি, শুধু তাই নয়, চূড়ান্ত অসঙ্গতি ও অস্বচ্ছতা থাকলেও তাঁদের বক্তব্য না শুনে ডিভিশন বেঞ্চ কাউন্সেলিং শুরু করার নির্দেশ দেন।
এরপরেই উপায় না দেখে হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন দায়ের করেন ওই চাকরিপ্রার্থীরা।মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী জানান যে এই প্রার্থীরা প্রথম তালিকাভুক্ত। তাদের নাম কেন বাদ দেওয়া হল তার কোনও সদুত্তর নেই। তিনি আরও অভিযোগ করেন, অনেক প্রার্থীর অ্যাকাডেমিক মার্কস বাড়ানো হয়েছে এবং টেট ওয়েটেজ বাড়িয়ে প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসএসসি টেট মার্কস-এর পুনর্মূল্যায়ণের আগে এবং পরে ওএমআর নম্বর প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছে এসএসসি।
মামলাকারীদের নাম কেন বাদ পড়ল মেধা তালিকা থেকে তার সুস্পষ্ট কোনও ইঙ্গিত দেয়নি এসএসসি। মামলাকারীদের বক্তব্য না শুনেই ডিভিশন বেঞ্চ একতরফা রায় দিয়েছেন বলেও অভিযোগ আইনজীবীর।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন