Top News

৭ বছর ধরে খুঁটিতে বাঁধা নাবালিকা

দুবরাজপুর : চিকিত্‍সা করানোর সামার্থ্য নেই বাবা-মায়ের। সে কারণেই বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে রাখা হচ্ছে ১৪ বছরের নাবালিকাকে। তাকে কখনও দড়ি, কখনও গামছা, আবার কখনও ওড়না দিয়ে বেঁধে রাখা হচ্ছে। বন্দি হয়েই কাটছে কৈশোর। দীর্ঘ সাত বছর ধরে এভাবেই বাঁধা অবস্থায় বাড়িতে রয়েছে ওই নাবালিকা।

ভয়াবহ এই ছবি দেখা গিয়েছে বীরভূমের দুবরাজপুরে হালসোত কলোনিপাড়ায়।

পরিবারের সদস্যরা বলছেন, জন্মের পর থেকে ওই নাবালিকা অল্প অল্প কথা বলতে শুরু করেছিল। কিন্তু পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকেই তাকে বাড়িতে বেঁধে রাখা হয়। কারণ বেঁধে না রাখলে সে যেখানে সেখানে পালিয়ে যায়। অর্থের অভাবে পরিবারের সদস্যরা তার চিকিত্‍সা করাতে পারছেন না। এমনকী ঠিক কী রোগ হয়েছে তাও ঠিক মতো বোঝা যায়নি।
কাঁদতে কাঁদতে নাবালিকার মা বলেন, "আমার মেয়ে চলে যাবে বলে বেঁধে রাখি। এ ছাড়া তো আমাদের কিছুই করার নেই। অনেকদিন থেকেই ওকে এইভাবে বেঁধে রাখি। কোথাও গেলে বেশি বেঁধে রাখার প্রয়োজন পড়ে। নাহলেই ও পালাবে। আমার স্বামী অসুস্থ। কোনও কাজ করতে পারে না। আমি ভিক্ষা করে কিছু নিয়ে এলে তবে খায়।" 

বাবা বলছেন, যখন ওর বয়স ৫ থেকে ৬ বছর তখন থেকেই ওকে বেঁধে রাখতে হয়। দিন-রাত সব সময়েই বাঁধা থাকে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, "আমি একদিন এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিডিও-র কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু, কথা বলা তো দূরের কথা, স্যর গেটটা অবধি খোলেনি। রোজই বলে আজ নয় কাল এসো, কাল নয় পরশু এসো।"

দুবরাজপুরের বিডিও রাজা আদক বলেন, "আমি ঘটনাটা শুনেছি। ওই মেয়েটি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন বলে জানতে পেরেছি। ঘটনাটা খুবই দুঃখজনক। ঘটনাটা নিয়ে আমি ডিএম সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমরা চেষ্টা করছি বাচ্চাটির হাতে প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট দিতে। তাহলে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যে মানবিক স্কিম রয়েছে তাতে হাজার টাকা প্রতিমাসে পাওয়া যায়। শংসাপত্র এলে টাকাটা পেতে সুবিধা হবে। ওই শংসাপত্র ওদের কাছে ছিল না।"

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন